Skip to main content

দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষিকাদের বিবাদ-অশ্রাব্য ভাষার জেরে পড়াশোনা লাটে উঠেছে উদং গার্লস হাইস্কুলে,ক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্থানীয়রা,গেটে ঝোলানো হল তালা

গেটে ঝোলানো হয়েছে তালা   
নিজস্ব প্রতিনিধি: আমতা-১ ব্লকের উদং গ্রাম শিক্ষা-সংস্কৃতির জন্য বিশেষভাবে সুখ্যাত।এই গ্রামেরই অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উদং উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে উদং সহ পার্শ্ববর্তী ফতেপুর,খড়দহ,সোনামুই,হাটুড়িয়া গ্রামের নারীশিক্ষার বিস্তারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।সেই স্বনামধন্য বিদ্যালয়ের সামনেই এবার অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হলেন প্রায় শ'পাঁচেক অভিভাবক ও অভিভাবিকা।
ক্ষুব্ধ জনতার বিক্ষোভ   

ক্লাস চালু হওয়ার পর বিভিন্ন শ্রেণীকক্ষ থেকে পড়ুয়াদের বের করে দিয়ে স্টাফরুম ও মূল দরজায় লাগিয়ে দেওয়া হল তালা।বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ,দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর ধরে বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন,শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ ও নিয়মশৃঙ্খলার চূড়ান্ত অবনতি ঘটেছে।

এব্যাপারে বারবার অভিভাবক সভা করে কিমবা প্রশাসনের উচ্চ স্তরে জানিয়েও সুরাহা মেলেনি।তাই স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে ১৬ দফা দাবি নিয়ে ডেপুটেশন জমা দেওয়ার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হলেন অভিভাবকরা।গ্রামে শিক্ষার পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে তাঁদের সমর্থন জানিয়ে বহু সাধারণ মানুষও এই বিক্ষোভে অংশ নেন।
বিক্ষোভে অভিভাবিকারা   

অভিভাবকদের অভিযোগ,দীর্ঘদিন ধরে পড়ুয়ারা শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে অনিয়মিত ক্লাসের অভিযোগ করে এলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।উপরন্তু,অভিযোগকারী ছাত্রীদের সাথে অভব্য আচরণ করছেন কিছু শিক্ষিকা।পড়ুয়ার গায়ে গন্ধ,তাই স্কুলে আসতে নাকি পড়ুয়াকে বারণ করেন শিক্ষিকা,এমনই গুরুতর অভিযোগ এনেছেন অভিভাবিকারা।দেরী করে স্কুলে আসা,নির্ধারিত সময়ের আগে চলে যাওয়া,সময় মেনে শিক্ষিকাদের ক্লাস না নিতে যাওয়ার পাশাপাশি স্কুল চলাকালীন শিক্ষিকারা নিজেদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া ও গালিগালাজ করেন বলেও তাঁদের অভিযোগ।

গত দু'দিন আগে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে মারমুখী হয়ে ওঠেন সহ-শিক্ষিকা ও প্রকাশ্যে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।এহেন ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে গ্রামের বহু মানুষ।এবিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা দেবযানী বিশ্বাসকে প্রশ্ন করা হলে তিনিও ঘটনার কথা স্বীকার করে নেন।তিনি বলেন বিদ্যালয়ের ভূগোলের শিক্ষিকা অদ্বিতীয়া বিশ্বাস তাঁর সাথে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেন ও জুতো মারার কথআ বলেন।অভিভাবিকা কাবেরী প্রামাণিকের কথায়,দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর ধরে ভূগোলের কোনো ক্লাস হয়না।এর পাশাপাশি ১৬ দফা ডেপুটেশনে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও দীর্ঘ ১ বছর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর কোনো ক্লাস না নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।এর সাথে পড়ুয়া নিরাপত্তার দিকেও আঙুল তোলা হয়েছে।স্থানীয় বাসিন্দা দেবজিৎ রায়,মলয় পল্ল্যেরা বলেন,স্কুলের মধ্যে শিক্ষিকাদের এই অভব্য আচরণ উদং গ্রামের সুস্থ সংস্কৃতির ধারাকে কলঙ্কিত করে।তাই অভিভাবকদের সাথে তাঁরাও এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন।বিক্ষোভে সামিল হওয়া পূজা পাঁজা,আশা বেরা,চম্পা পাঁজারা জানান,প্রশাসনকে যত শীঘ্র সম্ভব স্থায়ী সমাধান করতে হবে,নাহলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
বিক্ষোভের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে আমতা থানার পুলিশ।তাঁদের হস্তক্ষেপে প্রায় আড়াই ঘন্টা পর বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে নেন।এখন দেখার কয়েক'শো অভিভাবকের অবস্থান-বিক্ষোভের ঠেলায় দীর্ঘ প্রায় ৪ বছর ধরে 'অচলায়তন'-এ পরিণত হতে বসা গ্রামীণ হাওড়ার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হারিয়ে যেতে বসা গৌরব উদ্ধার করতে পারে কিনা।



★অভিভাবিকাদের ডেপুটেশন কপি👇 

Comments

Popular posts from this blog

সবুজ সচেতনতায় অভিনব পদক্ষেপ শ্যামপুরের স্কুলে,পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হল বিশেষ পেন

নিজস্ব প্রতিনিধি: দূষণের ফলে একদিকে যেমন  গলছে বরফ,বাড়ছে তাপমাত্র,তেমনই রাজধানী দিল্লি ঢেকে যাচ্ছে কুয়াশায়।এই দানবীয় শক্তির মূলে কুঠারাঘাত হানতে না পারলে অনতিদূরেই অপেক্ষা করছে ঘোরতর বিপদ।আর এই দানবীয় শক্তিকে রোধ করতে প্রয়োজন সবুজের।সবুজ রোপণ ও তার সঠিক পরিচর্যার।আর সেই বার্তাই নব প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চারিত করতে অভিনব উদ্যোগ নিল শ্যামপুর-২ ব্লকের নাওদা নয়নচন্দ্র বিদ্যাপীঠ।বিদ্যালয় কর্ত্তৃপক্ষের তরফে প্রায় ৩০০ পড়ুয়ার হাতে তুলে দেওয়া হল বিশেষ ধরনের পেন যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন গাছের বীজ।পেন ব্যবহারের পর তা ফেলে দিলে সেই বীজ মাটিতে পরে গাছ সৃষ্টি হবে বলে জানান বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সুচন্দ্রিমা সেনগুপ্ত। তিনি আরও জানান,পেনগুলি তৈরি করেছে শ্যামপুরের 'আলোর দিশা' নামক একটি সংস্থা।বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ছাত্রছাত্রীদের হাতে পেন তুলে দেন স্থানীয় অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক অমিত দাস।এর পাশাপাশি খুব শীঘ্রই স্থানীয় বাজারে কাগজের ঠোঙায় বীজ দিয়ে তা পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও বিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে।শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গৃহীত এই অভিনব পদক্ষেপ

এক টুকরো শান্তির নীড়ে চলছে পাঠদান,সবুজের সমারোহে সেজে উঠেছে গ্রামীণ হাওড়ার নাওদা নয়নচন্দ্র বিদ্যাপীঠ

পৃথ্বীশরাজ কুন্তী: নীলসাদা বিল্ডিংগুলি যেন একটুকরো শান্তির নীড়,আর তার মধ্যে প্রাণের স্ফুরণ ঘটাচ্ছে নবপ্রজন্মের তরতাজা প্রাণগুলো।শিক্ষাঙ্গন হোক মুক্তাঙ্গন।শিক্ষার সাথে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত স্বাস্থ্য।তাই শিক্ষাঙ্গনে স্বাস্থ্যকর সবুজ নির্মল পরিবেশ গড়ে তোলা আবশ্যক।আর সেই ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়েই বিদ্যালয়কে পড়ুয়াদের কাছে মুক্তাঙ্গন রূপে গড়ে তুলতে একগুচ্ছ অভিনব ভাবনার বাস্তবায়ন ঘটিয়েছে শ্যামপুর-২ ব্লকের নাওদা নয়নচন্দ্র বিদ্যাপীঠ। বিদ্যালয় চত্বরে প্রবেশ করার সময়ই অদ্ভুত সুন্দর ভালোলাগা তৈরি হয়ে যাবে বিদ্যালয়ের পারিপার্শ্বিক নীরব সবুজ পরিবেশে।মুহুর্তের মধ্যেই যে কেউ এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রেমে পরবে তা নির্দ্বিধায় বলাই যায়।না শুধু বিদ্যালয় চত্বর জুড়ে অনন্যসুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলাই নয়,সমানতালে বিভিন্ন সৃজনশীল ভাবনার প্রতিফলন ঘটেছে বিদ্যালয় চত্বরজুড়ে।জল সংরক্ষণের ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়ে গড়ে উঠেছে বৃষ্টির জল পুনর্ব্যবহারের বিশেষ ব্যবস্থা।  পাশাপাশি,২-৩ ফুট গর্ত করে সেখানে সোকপিট করে তৈরি  হয়েছে ভৌমজল সঞ্চয়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।পড়ুয়াদের

বন্যপ্রাণ রক্ষায় এগিয়ে এলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি

নিজস্ব প্রতিনিধি: সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে বন্যপ্রাণ রক্ষায় রাজ্যের নানা প্রান্তে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে।বন্যপ্রাণী সম্পর্কে মানুষও ক্রমে সচেতন হচ্ছেন।এবার বন্যপ্রাণ রক্ষায় সরাসরি এগিয়ে এলেন আমতা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকান্ত কুমার পাল।জানা গেছে,আজ আমতা-২ ব্লকের নারিট থেকে কুশবেড়িয়ায় একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে নারিট-কুশবেড়িয়া রোডের তেগেছিয়ার কাছে রাস্তায় একটি পেঁচাকে পরে থাকতে দেখেন তিনি। পেঁচাটির শরীরে সামান্য আঘাতও ছিল।তৎক্ষনাৎ সুকান্ত বাবু নিজের গাড়িতে পেঁচাটিকে তুলে নেন।তিনি ও তাঁর সহযাত্রী অভিজিৎ প্রামাণিক পেঁচাটিকে দ্রুত উদ্ধার করে নিয়ে এসে বন দপ্তরের কর্মীদের হাতে তুলে দেন।সুকান্ত পাল বলেন,"বন্যপ্রাণ রক্ষা ও সংরক্ষণে সকলকে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।সমাজের সর্বস্তরে গড়ে তুলতে হবে সচেতনতা।"